খুলনা প্রতিনিধিঃ
খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় জনসভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচনে যাবে বিএনপি। এই সরকার গায়ের জোরে, ক্ষমতার দাপটে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। তাই তারা একের পর এক মানুষ খুন করছে, গুম করছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করেছে। বেগম জিয়ার মুক্তির দাবির আন্দোলনে সারাদেশে ৫ হাজার কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার ভোটের অধিকার,গণতন্ত্রের অধিকার, ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তারা জনগনকে ভয় পায়। খুলনার এই বিশাল জনসভার মাধ্যমে খালেদা জিয়া ও দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকারের লড়াইয়ের সূচনা হল ।শহীদ হাদিস পার্কে পুলিশ ১৪৪ জারির পর গতকাল শনিবার বিকালে নগরীর কেডিঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয় সংলগ্ন হেলাতলা মোড়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ভোর থেকে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ও সাঁজোয়া যান অবস্থান নেয়। শুক্রবার রাত ও গতকাল সকালে বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।বিএনপির খুলনা মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, মশিউর রহমান, সৈয়দ মেহেদী রুমি, মুজিবর রহমান সরোয়ার, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সোহরাব হোসেন,জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, মাসুদ অরুন, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, অমলেন্দু দাস, কবির মুরাদ, অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা, খুলনা সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, আব্দুস সালাম, নড়াইল জেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, অহেদুল ইসলাম বিশ্বাস প্রমুখ।মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারের জরাজীর্ণ একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। তাকে ন্যূনতম আইনি অধিকার দেয়া হয়নি। সেদিন তাকে দেখতে গিয়ে আমাদের চোখে পানি এসে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখলাম তিনি সেই আগের মতই তেজস্বী রয়েছেন। গণতন্ত্রের জন্য এ রকম ত্যাগ শিকার করতে অন্য কোনো নেত্রীকে আমরা আগে দেখি নাই। তিনি সম্পূর্ণ একাকী দীর্ঘ ১০ বছর নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করেছেন। কিন্তু মাথা নত করেননি।মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ ধংস করে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের মুখে পদতাগ ও দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী নেতারা পুকুর চুরি করছে। ব্যাংক লুট করা হচ্ছে। মিডিয়ার সামনে মিথ্যাকে সত্য আর সত্যকে মিথ্যা বলছে।ফখরুল বলেন, এখন আন্দোলন শুধু খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নয়, সাথে সাথে গণতন্ত্র, দেশ রক্ষা ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হবোই। পুলিশকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, আপনারা কেন জনগণের প্রতিপক্ষ হচ্ছেন। এই অবস্থা কি চিরদিন থাকবে ? আপনারা জনগনের পাশে দাড়ান।বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ উপাধি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য অনেক সংগ্রাম করেছেন, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এ জন্য তাকে এ উপাধি দেয়া হলো।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১১মার্চ২০১৮/ইকবাল